অর্জুন একটি বৃহৎ গাছ; ৫০/৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, পাতাগুলির আকার
একটু
মত কিন' মাংসল নয়, শক্ত গাছটির বোটনিক্যাল্ নাম Terminalia
arjuna.ফ্যামিলি- Combretaceae. সমগ্র
উপমহাদেশে কম-বেশী।
এ গাছ দেখা যায়।
ঔষধি গুনঃ
ভেষজশাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা
হয়ে থাকে,
বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ
থাকা আর
এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা।এর ঔষধি গুন মানবসমাজের
দৃষ্টি আকর্ষন
করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।
শরীরের বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে
অর্জুন
ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও
বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী
দিক
উদ্ভাবিত হচ্ছে।
·যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন
ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা
হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল
এর সাথে
মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি
থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে
পেটে যাতে
বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
·অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয়,
হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা
বাড়ে।এটি রক্তের কোলেষ্টরল
কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
·বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং
লিভারসিরোসিসের টনিক
হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
·অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ
টানিন মুখ,জিহ্বা ও মাড়ীর প্রদাহের
চিকিৎসায় ব্যাবহার
হয়।এটি মাঢ়ীঢ়
রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের
ছাল বেটে লাগালে সেরে
যায়।
·অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়,
ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর
ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
·এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
·এ ছাড়া অর্জুনে saponin রয়েছে,
একটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়।
তাই চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যাবহ্রত
হয়।
যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও অর্জুনের ছালের রস ব্যাবহার হয়।
·অর্জুনের ছালে essential oil রয়েছে
তাই অর্জুন খাদ্যা হজম ক্ষমতা
বাড়ায়।খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক
রাখতে সাহায্য করে
·ক্যান্সার কোষের বর্ধন রোধকারী gallic acid,ethy gallae ও
lutenolin
রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারনে এটি ক্যান্সার চিকিৎসায়
ব্যাহারের
সুযোগ রয়েছে।
ভেষজ শাস্ত্রে ঔষধি গাছ হিসেবে অর্জুনের ব্যবহার অগণিত।
বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ
থাকা আর
একজন চিকিৎসক থাকা একই কথা। এর ঔষধি গুণ মানব
সমাজের
দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।
শারীরিক বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবত করার
ভেষজ রস হিসেবে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ
রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়। তারপর যতদিন যাচ্ছে
অর্জুনের
উপকারী দিক ততই উদ্ভাসিত হচ্ছে।
অর্জুন এমনি এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ যা মানব কল্যাণে
ব্যবহৃত
হচ্ছে বহু যুগ ধরে। এটি কমব্রিটেসি
গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এ গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia arjuna ,
সংস্কৃত নাম ককুভ।
বৃহদাকৃতির বহুবর্ষজীবী এই উদ্ভিদটি প্রায় ১৮-২৫ মিটার
উচ্চতা বিশিষ্ট
হয়ে থাকে। গাছটির মাথা ছড়ানো
ডালগুলো নীচের দিকে ঝুলানো থাকে। পাতা দেখতে অনেকটা
মানুষের
জিহবাকৃতির। ছাল খুব মোটা এবং
ধূসর বর্ণের। গাছ থেকে সহজেই ছাল উঠানো যায়। ফল দেখতে
কামরাঙ্গার মত, পাঁচ খাঁজ বিশিষ্ট কিন্তু
আকৃতিতে অনেক ছোট। শীতের শেষেই সাধারণত গাছ নিষ্পত্র
হয়ে
যায় এবং বসন্তে নতুন পাতায় গাছ
ভরে যায়। নতুন পাতা গজানোর সময়েই গাছের শাখাগুলো
পুষ্পমঞ্জরিতে ভরে ওঠে।
নিম্মে অর্জুনের কিছু উপকারি দিক বর্ণনা করা হলোঃ
হৃদরোগঃ
অর্জুনের প্রধান ব্যবহার হৃদরোগে। অর্জুন ছালের রস
কো-এনজাইম
কিউ-১০ সমৃদ্ধ। এই কো-এনজাইম
কিউ-১০ হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। বাকলের
রস
ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল লেভেল
কমায়। অর্জুনের ছাল বেটে রস খেলে হৃদপিন্ডের পেশি
শক্তিশালী হয়
এবং হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে।
বাকলের ঘন রস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি
পেটে
খেতে হবে। বাকলে রস না থাকলে
শুকনো বাকলের গুঁড়া ১-২ গ্রাম দুধের সাথে মিশিয়ে সকালে
খালি পেটে খেতে হবে।
অ্যাজমাঃ
অর্জুন ছালের পাউডার ১২ গ্রাম দুধের ক্ষীর বা পায়েসের
সাথে মিশিয়ে
খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির
অ্যাজমা রোগের স্থায়ী সমাধান হবে।
ক্ষয়কাশেঃ
অর্জুন ছালের গুঁড়া, বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে শুকিয়ে রাখতেন
প্রাচীন বৈদ্যেরা। দমকা কাশি হতে
থাকলে একটু ঘি ও মধু বা মিছরির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে দিতেন।
এতে কাশির উপকার হতো।
হাড় মচকে গেলে বা চিড় খেলেঃ
অর্জুন ছাল ও রসুন বেটে অল্প গরম করে মচকানো জায়গায়
লাগিয়ে বেঁধে
রাখলে সেরে যায়। তবে সেই
সাথে অর্জুন ছালের চূর্ণ ২-৩ গ্রাম মাত্রায় আধা চামচ ঘি
ও সিকি কাপ দুধ
মিশিয়ে অথবা শুধু দুধ মিশিয়ে
খেলে আরও ভালো হয়।
ত্বকের পরিচর্যাঃ
ত্বকে ব্রণের ক্ষেত্রে অর্জুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। ছালের চূর্ণ মধুর
সাথে মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগালে
খুব দ্রুত উপকার হয়। এছাড়া ছালের মিহি গুঁড়া মধু মিশিয়ে
লাগালে
মেচতার দাগ দূর হয়।
বুক ধড়ফড়ঃ
যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের পক্ষে অর্জুন
ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা
হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মিলি পানির
সাথে
মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক
১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকাল বেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি
অবশ্যই
কমবে। তবে পেটে যেন বায়ু না থাকে
সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লো-ব্লাড প্রেসারে উপযুক্ত
নিয়মে তৈরি
করে খেলেও অবশ্য প্রেসার বাড়বে।
রক্তপিত্তেঃ
মাঝে মাঝে কারণে বা অকারণে রক্ত ওঠে বা পড়ে। সেক্ষেত্রে
৪-৫ গ্রাম
ছাল রাত্রিতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে
সকালে ছেঁকে নিয়ে পানিটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ফোঁড়াঃ
ফোঁড়া হলে পাতা দিয়ে ঢেকে রাখলে ফোঁড়া ফেটে যায়, তারপর পাতার
রস দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
ক্ষত বা ঘাঃ
শরীরে ক্ষত বা ঘা হলে, খোস-পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছালের ক্বাথ
দিয়ে ধুয়ে ছালের মিহি গুঁড়া
পানি দিয়ে
মিশিয়ে লাগালে দ্রুত ঘা সেরে যায়।
কানের ব্যথায়ঃ
কানের ব্যথায় অর্জুন ব্যবহার করা হয়। কচি পাতার রস কানের
ভিতরে
দুই ফোঁটা করে দিলে কানের ব্যথা ভালো হয়।
যৌন রোগঃ
যাদের মধ্যে যৌন অনীহা (Lack of
Libido) দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে
অর্জুনের ছাল চূর্ণ উপকারী। এই
ছাল
চূর্ণ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত
খেলে এই রোগ
দূর হয়। এছাড়া যাদের শুক্রমেহ
(Spermatorrhoea) আছে তারা অর্জুন ছালের গুঁড়া ৪-৫ গ্রাম
৪-৫ ঘণ্টা
আধা পোয়া গরম পানিতে ভিজিয়ে
রেখে, তারপর
ছেঁকে ওই পানির সাথে ১ চামচ শ্বেতচন্দন মিশিয়ে খেলে
উপকার হয়। এটা সুশ্রুত সংহিতার
কথা।
রক্ত আমাশয়েঃ
৪-৫ গ্রাম অর্জুন ছালের ক্বাথে ছাগলের দুধ মিশিয়ে খেলে
রক্ত আমাশয়
ভালো হয়।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
ডায়রিয়া বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে অর্জুনের
ছাল ৪৫-৩০
গ্রাম করে খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
ও অসুবিধা দূর হয়। মুখ, জিহ্বা ও মাড়ির প্রদাহে : অর্জুনের ছাল এসব
রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
এটি মাড়ির রক্তপাতও বন্ধ করে। এছাড়াও অর্জুন ছাল সংকোচক
ও জ্বর
নিবারক হিসেবেও কাজ করে।
এছাড়াও এর রয়েছে অনেক ঔষধিগুণ। ইদানিং অর্জুন গাছের ছাল
থেকে
‘অর্জুন চা’ তৈরি
হচ্ছে যা হৃদরোগের
জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। DOS থেরাপি অনুযায়ী অর্জুন ফল দেখতে মানব
দেহের হৃদপিন্ডের মতো তাই
অর্জুনকে
হৃদরোগের মহৌষধ বলা হয়।
সূত্রঃ http://www.online-dhaka.com/80_89_35934_0-terminalia-arjuna-in-herbal.html

অর্জুন একটি বৃহৎ গাছ; ৫০/৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, পাতাগুলির আকার
একটু
মত কিন' মাংসল নয়, শক্ত গাছটির বোটনিক্যাল্ নাম Terminalia
arjuna.ফ্যামিলি- Combretaceae. সমগ্র
উপমহাদেশে কম-বেশী।
এ গাছ দেখা যায়।
ঔষধি গুনঃ
ভেষজশাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা
হয়ে থাকে,
বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ
থাকা আর
এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা।এর ঔষধি গুন মানবসমাজের
দৃষ্টি আকর্ষন
করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।
শরীরের বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে
অর্জুন
ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও
বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী
দিক
উদ্ভাবিত হচ্ছে।
·যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন
ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা
হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল
এর সাথে
মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি
থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে
পেটে যাতে
বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
·অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয়,
হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা
বাড়ে।এটি রক্তের কোলেষ্টরল
কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
·বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং
লিভারসিরোসিসের টনিক
হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
·অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ
টানিন মুখ,জিহ্বা ও মাড়ীর প্রদাহের
চিকিৎসায় ব্যাবহার
হয়।এটি মাঢ়ীঢ়
রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের
ছাল বেটে লাগালে সেরে
যায়।
·অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়,
ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর
ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
·এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
·এ ছাড়া অর্জুনে saponin রয়েছে,
একটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়।
তাই চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যাবহ্রত
হয়।
যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও অর্জুনের ছালের রস ব্যাবহার হয়।
·অর্জুনের ছালে essential oil রয়েছে
তাই অর্জুন খাদ্যা হজম ক্ষমতা
বাড়ায়।খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক
রাখতে সাহায্য করে
·ক্যান্সার কোষের বর্ধন রোধকারী gallic acid,ethy gallae ও
lutenolin
রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারনে এটি ক্যান্সার চিকিৎসায়
ব্যাহারের
সুযোগ রয়েছে।
ভেষজ শাস্ত্রে ঔষধি গাছ হিসেবে অর্জুনের ব্যবহার অগণিত।
বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ
থাকা আর
একজন চিকিৎসক থাকা একই কথা। এর ঔষধি গুণ মানব
সমাজের
দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।
শারীরিক বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবত করার
ভেষজ রস হিসেবে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ
রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়। তারপর যতদিন যাচ্ছে
অর্জুনের
উপকারী দিক ততই উদ্ভাসিত হচ্ছে।
অর্জুন এমনি এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ যা মানব কল্যাণে
ব্যবহৃত
হচ্ছে বহু যুগ ধরে। এটি কমব্রিটেসি
গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এ গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia arjuna ,
সংস্কৃত নাম ককুভ।
বৃহদাকৃতির বহুবর্ষজীবী এই উদ্ভিদটি প্রায় ১৮-২৫ মিটার
উচ্চতা বিশিষ্ট
হয়ে থাকে। গাছটির মাথা ছড়ানো
ডালগুলো নীচের দিকে ঝুলানো থাকে। পাতা দেখতে অনেকটা
মানুষের
জিহবাকৃতির। ছাল খুব মোটা এবং
ধূসর বর্ণের। গাছ থেকে সহজেই ছাল উঠানো যায়। ফল দেখতে
কামরাঙ্গার মত, পাঁচ খাঁজ বিশিষ্ট কিন্তু
আকৃতিতে অনেক ছোট। শীতের শেষেই সাধারণত গাছ নিষ্পত্র
হয়ে
যায় এবং বসন্তে নতুন পাতায় গাছ
ভরে যায়। নতুন পাতা গজানোর সময়েই গাছের শাখাগুলো
পুষ্পমঞ্জরিতে ভরে ওঠে।
নিম্মে অর্জুনের কিছু উপকারি দিক বর্ণনা করা হলোঃ
হৃদরোগঃ
অর্জুনের প্রধান ব্যবহার হৃদরোগে। অর্জুন ছালের রস
কো-এনজাইম
কিউ-১০ সমৃদ্ধ। এই কো-এনজাইম
কিউ-১০ হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। বাকলের
রস
ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল লেভেল
কমায়। অর্জুনের ছাল বেটে রস খেলে হৃদপিন্ডের পেশি
শক্তিশালী হয়
এবং হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে।
বাকলের ঘন রস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি
পেটে
খেতে হবে। বাকলে রস না থাকলে
শুকনো বাকলের গুঁড়া ১-২ গ্রাম দুধের সাথে মিশিয়ে সকালে
খালি পেটে খেতে হবে।
অ্যাজমাঃ
অর্জুন ছালের পাউডার ১২ গ্রাম দুধের ক্ষীর বা পায়েসের
সাথে মিশিয়ে
খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির
অ্যাজমা রোগের স্থায়ী সমাধান হবে।
ক্ষয়কাশেঃ
অর্জুন ছালের গুঁড়া, বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে শুকিয়ে রাখতেন
প্রাচীন বৈদ্যেরা। দমকা কাশি হতে
থাকলে একটু ঘি ও মধু বা মিছরির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে দিতেন।
এতে কাশির উপকার হতো।
হাড় মচকে গেলে বা চিড় খেলেঃ
অর্জুন ছাল ও রসুন বেটে অল্প গরম করে মচকানো জায়গায়
লাগিয়ে বেঁধে
রাখলে সেরে যায়। তবে সেই
সাথে অর্জুন ছালের চূর্ণ ২-৩ গ্রাম মাত্রায় আধা চামচ ঘি
ও সিকি কাপ দুধ
মিশিয়ে অথবা শুধু দুধ মিশিয়ে
খেলে আরও ভালো হয়।
ত্বকের পরিচর্যাঃ
ত্বকে ব্রণের ক্ষেত্রে অর্জুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। ছালের চূর্ণ মধুর
সাথে মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগালে
খুব দ্রুত উপকার হয়। এছাড়া ছালের মিহি গুঁড়া মধু মিশিয়ে
লাগালে
মেচতার দাগ দূর হয়।
বুক ধড়ফড়ঃ
যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের পক্ষে অর্জুন
ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা
হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মিলি পানির
সাথে
মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক
১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকাল বেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি
অবশ্যই
কমবে। তবে পেটে যেন বায়ু না থাকে
সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লো-ব্লাড প্রেসারে উপযুক্ত
নিয়মে তৈরি
করে খেলেও অবশ্য প্রেসার বাড়বে।
রক্তপিত্তেঃ
মাঝে মাঝে কারণে বা অকারণে রক্ত ওঠে বা পড়ে। সেক্ষেত্রে
৪-৫ গ্রাম
ছাল রাত্রিতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে
সকালে ছেঁকে নিয়ে পানিটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ফোঁড়াঃ
ফোঁড়া হলে পাতা দিয়ে ঢেকে রাখলে ফোঁড়া ফেটে যায়, তারপর পাতার
রস দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
ক্ষত বা ঘাঃ
শরীরে ক্ষত বা ঘা হলে, খোস-পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছালের ক্বাথ
দিয়ে ধুয়ে ছালের মিহি গুঁড়া
পানি দিয়ে
মিশিয়ে লাগালে দ্রুত ঘা সেরে যায়।
কানের ব্যথায়ঃ
কানের ব্যথায় অর্জুন ব্যবহার করা হয়। কচি পাতার রস কানের
ভিতরে
দুই ফোঁটা করে দিলে কানের ব্যথা ভালো হয়।
যৌন রোগঃ
যাদের মধ্যে যৌন অনীহা (Lack of
Libido) দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে
অর্জুনের ছাল চূর্ণ উপকারী। এই
ছাল
চূর্ণ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত
খেলে এই রোগ
দূর হয়। এছাড়া যাদের শুক্রমেহ
(Spermatorrhoea) আছে তারা অর্জুন ছালের গুঁড়া ৪-৫ গ্রাম
৪-৫ ঘণ্টা
আধা পোয়া গরম পানিতে ভিজিয়ে
রেখে, তারপর
ছেঁকে ওই পানির সাথে ১ চামচ শ্বেতচন্দন মিশিয়ে খেলে
উপকার হয়। এটা সুশ্রুত সংহিতার
কথা।
রক্ত আমাশয়েঃ
৪-৫ গ্রাম অর্জুন ছালের ক্বাথে ছাগলের দুধ মিশিয়ে খেলে
রক্ত আমাশয়
ভালো হয়।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
ডায়রিয়া বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে অর্জুনের
ছাল ৪৫-৩০
গ্রাম করে খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
ও অসুবিধা দূর হয়। মুখ, জিহ্বা ও মাড়ির প্রদাহে : অর্জুনের ছাল এসব
রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
এটি মাড়ির রক্তপাতও বন্ধ করে। এছাড়াও অর্জুন ছাল সংকোচক
ও জ্বর
নিবারক হিসেবেও কাজ করে।
এছাড়াও এর রয়েছে অনেক ঔষধিগুণ। ইদানিং অর্জুন গাছের ছাল
থেকে
‘অর্জুন চা’ তৈরি
হচ্ছে যা হৃদরোগের
জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। DOS থেরাপি অনুযায়ী অর্জুন ফল দেখতে মানব
দেহের হৃদপিন্ডের মতো তাই
অর্জুনকে
হৃদরোগের মহৌষধ বলা হয়।
No comments:
Post a Comment