Saturday, January 14, 2017

গোলমরিচ এর গুন!

বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae
বিভাগ: Angiosperms
শ্রেণী: Magnoliids
আদেশ: Piperales
পরিবার: Piperaceae
গণ: Piper
প্রজাতি: P. nigrum
দ্বিপদী/ ভেষজ নাম: Piper nigrum L.
উদ্ভিদের নাম : গোলমরিচ
স্থানীয় নাম : গোলমরিচ
ব্যবহার্য অংশ : পাতা, ফল, লতা মূল

রোপনের সময় : এই গোলমরিচ লতানে গাছ হলেও অন্য গাছের আশ্রয় ভিন্ন এরা বাড়ে না। এই গণের লতাজাতীয় কয়েকটি গাছের প্রতি পর্বে শিকড় বেরোয় এবং ঐ শিকড়গুলি গাছকে আকঁড়ে ধরে রাখে। এই লতাগাছ ৫/৭ বৎসরের
হলেও বড়জোর আঙ্গুলের মত মোটা হয়। পাতা আকারে প্রায় মিঠে পানের মত।
কালো, সবুজ, গোলাপী, সাদা গোলমরিচ
উত্তোলনের সময় : মরিচ ফল ডাঁসা অবস্থায় (পাকার পূর্বাবস্থায়) সংগ্রহ করা হয়, তাপর তাকে রৌদ্র বা মৃদু উত্তাপে শুকিয়ে নিলেই প্রচলিত গোলমরিচের অবস্থায় এসে যায়। সা মরিচ (সাদা মরিচ) মরিচফল পাকলে লাল হয়, সেই পাকা মরিচগুলি পানিতে র’গড়ে ওপরের খোসাগুলিকে তুলে দেওয়া হয় এবং রৌদ্রে শুকানো হয়। অনেক সময় ক্লোরিনের পানিতে একে ধুয়ে সাদা করা হয়। তবে এটা ঠিক, সাদা মরিচ অপেক্ষাকৃত ঝাল কম।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : পূর্বে বোম্বাই প্রদেশের কানাড়া জেলার জঙ্গলে গোলমরিচ আপনা-আপনিই হয়ে থাকতে দেখা গেলেও তার পূর্ব থেকেই ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ঐসব অঞ্চলে চাষ হয়ে আসছে, এ ভিন্ন মাদ্রাজের পশ্চিম উপকূলভাগে আর্দ্র ভূমির অঞ্চলে এর চাষ করা হয়ে থাকে, তাছাড়া মালাবারেও ব্যাপকভাবে একে উৎপন্ন করা হয়।
চাষের ধরণ : চাষের পদ্ধতিঃ- আম, কাঁঠাল, কাজু বাদাম, মাদার, সুপারি প্রভৃতি গাছের তলার মাটিতে মরিচ লতার ডগা (শিকড় সমেত পর্ব) বসানো হয়। আস্তে আস্তে পাতা গজিয়ে ঐ লতা বেড়ে যেতে থাকে, ঐ পাতার ও লতার পর্ব থেকে শিকড় বেরিয়ে গাছকে আঁকড়ে ধরে উঠে যায়। এই ভাবে ২৫/৩০ ফুট পর্যন্তও উঠতে পারে, তবে ১০/১২ ফুটের বেশী উচুতে এদের উঠতে দেওয়া হয় না। ৩/৪ বৎসর পরে এইসব গাছে গোলমরিচ হতে শুরু হয়, তারপর থেকে ৩/৪বৎসর বেশী পরিমান গোলমরিচ জন্মে, ফল হওয়া কমে গেলে ওগুলিকে কেটে ফেলে আবার নতুন গাছ ঐ গাছের তলায় লাগানো হয়।
উদ্ভিদের ধরণ: লতাজাতীয় গাছ,
পরিচিতি: এই গোলমরিচ লতানো গাছ হলেও অন্য গাছের আশ্রয় ভিন্ন এরা বাড়ে না। এই লতাজাতীয় গাছের প্রতি পর্বে শিকড় বেরোয় এবং ঐ শিকড়গুলি গাছকে আকঁড়ে ধরে রাখে। এই লতাগাছ ৫/৭ বৎসরের হলেও বড়জোর আঙ্গুলের মত মোটা হয়। পাতা আকারে প্রায় মিঠে পানের মত।
উপাদান:
ঔষধি গুনাগুন :মরিচ প্রধানতঃ- কাজ করে রসবহস্রোতে এবং অগ্ন্যাশয়ে বা পচ্যমানাশয়ে।
১। কাসিতেঃ যে কাসিতে সর্দি উঠে যাওয়ার পর একটু উপশম হয়, অথবা পানি খেয়ে বমি হয়ে গেলে যে কাসির উদ্বেগটা চলে যায়, বুঝতে হবে এই কাসি আসছে অগ্ন্যাশয়ের বিকৃতি থেকে, যেটাকে আমরা সাধারনে বলে থাকি পেট গরমের কাসি। সেক্ষেত্রে গোলমরিচ গুড়ো করে, কাপড়ে ছেকে নিয়ে, সেই গুড়ো এক গ্রাম মাত্রায় নিয়ে একটু গাওয়া ঘি ও মধু মিশিয়ে, অথবা ঘি ও চিনি মিশিয়ে সকাল থেকে মাঝে মাঝে একটু একটু করে ৭/৮ ঘন্টার মধ্যে ওটা চেটে খেতে হবে। এর দ্বারা ২/৩ দিনের মধ্যে ঐ পেট গরমের কাসিটা প্রশমিত হবে। চায়ের সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে জ্বর ও ঠাণ্ডায় উপকার পাওয়া যাবে।
২। আমাশয়ঃ- এই আমাশয় আম বা মল বেশী পড়ে না কিন্তু শুলুনি ও কোঁথানিতে বেশী কষ্ট দেয়, এক্ষেত্রে মরিচ চুর্ণ এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বৈকালে দুবার পানিসহ খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ আমদোষ ২/৩ দিনের মধ্যেই চলে যাবে।
৩। ক্ষীন ধাতুতেঃ- এখানে কিন্তু শুক্র সর্ম্পকীয় ধাতুর কথা বলা হচ্ছে না, এটা আমাদের সমগ্র শরীরে যে রস, রক্ত, মাংস, মেদ, অস্থি, মজ্জা ও শুক্র আছে সেই সম্পধাতু সর্ম্পকে বলা হচ্ছে।
৪। ভুক্তপাকেঃ- লোভও সামলানো যায় না, খেয়েও হজম হয় না, একটু তেল ঘি জাতীয় গুরুপাক কিছু খেলেই অম্বলের ঢেকুর, গলা-বুক জ্বালা, তারপর বমি হলে স্বস্তি। যদি কোন সময় এই ক্ষেত্র উপস্থিত হয়, তাহলে খাওয়ার পরই গোল মরিচের গুড়ো এক গ্রাম বা দেড় গ্রাম মাত্রায় পানিসহ খেয়ে ফেলবেন, এর দ্বারা সেদিনটার মত নিস্কৃতি পাবেন, তবে, রোজই অত্যাচার করবো আর রোজই মরিচ খাবো, এটা করলে চলবে না।
৫। নাসা রোগেঃ- এই রোগের নামটি তো ক্ষুদ্র, রোগটি কিন্তু এতটা লঘু নয়, এই রোগের মূল কারন রসবহ স্রোতের বিকার, আর তার লীলাক্ষেত্র হলো গলা থেকে উপরের দিকটায়। এর লক্ষণ হলো প্রথমে নাকে সর্দি তারপর নাক বন্ধ, কোন কোন সময় কপালে যন্ত্রনা, ঘ্রানশক্তির হ্রাস এবং দুর্গন্ধও বেরোয়, এমনকি আহারের রুচিও কমে যায়, কারও কারও ঘাড়ে যন্ত্রনা হতে শুরু করে, নাক দিয়ে রক্তও পড়ে এক্ষেত্রে পুরানো (পুরাতন) আখের গুড় ৫ গ্রাম, গরুর দুধের দই (এই দই বাড়ীতে পেতে নিলে ভাল হয়) ২৫ গ্রাম, তার সঙ্গে এক গ্রাম মরিচের গুড়ো মিশিয়ে সকালে ও বৈকালে দুবার খেতে হবে। এর দ্বারা ৩/৪দিন পর থেকে ঐ সব উপসর্গ কমতে শুরু করবে।
৬। ক্রিমি রোগেঃ- অগ্ন্যাশয় বিকারগ্রস্ত, তারই পরিনতিতে রসবহ স্রোতের বিকার, এই দুটি বিকারের ফলে যে ক্রিমির জন্ম হবে, সেটার লক্ষণ হলো পেটের উপরের অংশটায় (দু’ধারের পাঁজরের হাড়গুলির সংযোগস্থলের নিচেটায়) মোচড়ানি ব্যাথা, এটা ২ থেকে ৭/৮বৎসর বয়সের বালক-বালিকাদেরই হয়। এই ক্রিমির কবলে পড়লে মাথাটা একটু হেড়ে (বড়) হতে থাকে, এদের মুখ দিয়ে পানি ওঠে না, প্রায়ই যখন তখন পেটে ব্যথা ধরে এই ক্ষেত্রে বালক-বালিকাদের জন্য ৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় মরিচের গুড়োয় একটু দুধ মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। দরকার হলে সকালে বৈকালে ২ বার খেতে দিতে পারা যায়।
৭। শিশুদের ফুলো বা শোথেঃ- ঠান্ডা হাওয়া লাগানো বা প্রস্রাবের উপর পড়ে থাকা, শীতকালে উপযুক্ত বস্ত্রের অভাবে যেসব শিশু ফুলে যায়, সেখানে টাটকা মাখনের সঙ্গে ৫০ মিলিগ্রাম মরিচের গুড়ো মিশিয়ে রাখতে হবে, সেটা একটু একটু করে জিভে লাগিয়ে চাটিয়ে দিতে হবে।
৮। গনোরিয়াঃ- এই রোগকে আর্য়ুবেদে বলা হয় ঔপসর্গিক মেহ। এই রোগে প্রস্রাবের সময় বা পরে অথবা অন্য সময়েও টিপলে একটু পুজের মত বেরোয়, এক্ষেত্রে মরিচ চূর্ণ ৮০০ মিলিগ্রাম মাত্রায় দুবেলা মধুসহ খেতে হবে। প্রথমে ২/৩দিন একবার করে খাওয়া ভাল।
৯। মুত্রাবরোধেঃ- প্রস্রাব একটু একটু হতে থাকে এবং থেমেও যায়, পূর্ব থেকে এদের হজমশক্তিও কমে গিয়েছে ধরে নিতে হবে। এরা গোলমরিচ ২ গ্রাম নিয়ে চন্দনের মত বেটে, একটু মিশ্রি বা চিনি দিয়ে শরবত করে খাবেন।
১০। ফিক্ ব্যথায়ঃ- কি কোমরে, কি পাঁজরে এবং কি ঘাড়ে ফিক্ ব্যাথা ধরেছে ঝাড়ফুকও করতে হবে না, আর মালিশও করতে হবে না, শুধু গোলমরিচের গুড়ো এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় গরম পানি সহ সকালে ও বৈকালে ব্যবহার করবেন, এটাতে ঐ ফিক্ ব্যথা ছেড়ে যাবে।
বাহ্য প্রয়োগ :
১১। ঢুলুনি রোগেঃ কথা কইতে মনের অগোচরে মাথা নেমে যাচ্ছে, চেষ্টা করেও সামলানো যাচ্ছে না, এক্ষেত্রে মুখের লালায় গোলমরিচ ঘষে চোকে কাপানিতের মত লাগাতে হবে, এর দ্বারা ঐ ঢুলুনি রোগ সেরে যাবে। এটি একটি তান্ত্রিক যোগ।
১২। নিদ্রাহীনতায়ঃ- এই অনিদ্রা রোগ যাঁদের হয় সাধারনতঃ এরা একটু মেদস্বী বা স্থুলদেহী। এরা কুলেখাড়ার (Asteracantha Longifolia) মূল শুকিয়ে নিয়ে তার ১০ গ্রাম ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছেকে সন্ধ্যেবেলা খেতে হবে। আর একটি গোলমরিচ নিজের মুখের লালায় ঘষে কাপানিতের মত চোখে লাগালে এর দ্বারা ঐ নিদ্রাহীনতা চলে যাবে। এটাও একটি তান্ত্রিক প্রক্রিয়া, দেখা যাচ্ছে রোগ ভেদে তার ক্রিয়া বিপরীতধর্মী হয়েছে।
১৩। বিষাক্ত পোকার জ্বালায়ঃ- বোল্তা, ভীমরুল, কাঁকড়াবিছে, ডাঁস যেসব কীট পতঙ্গ কামড়ালে বা হুল ফোটালে জ্বালা করে, সেই জ্বালায় গোলমরিচ পানিতে ঘষে, তার সঙ্গে ২/৫ফোঁটা ভিনিগার মিশিয়ে ঐ দস্টস্থানে বা হুলবিদ্ধ জায়গায় লাগালে জ্বালাটা কমে যাবে।
১৪। টাক রোগেঃ- এ রোগ শুধু যে মাথায় হয় তা নয়, ভ্রু, গোঁফ প্রভৃতি যেখানেই লোমশ জাযগা, সেখানেই তার বসতি। একে বৈদ্যকের ভাষায় ইন্দ্রলুপ্ত বলে। এই ক্ষেত্রে প্রথমে ছোট ধানি পেঁয়াজের রস ঐ ব্যাধিতস্থানে লাগাতে হবে, তারপর ঐ জায়গায় গোলমরিচ ও সৈন্ধব লবন একসঙ্গে বেটে ওখানে লাগিয়ে রাখতে হবে। ব্যবহারের কয়েকদিন বাদ থেকে ওখানে নতুন চুল গজাতে থাকবে।
* গবেষণায় দেখা গেছে, এটি শরীর থেকে ফ্রি রেডিক্যালস বের করে দিতে সাহায্য করে।
* এটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
* গোলমরিচ দন্ত ক্ষয় রোধ করে।
* গোলমরিচ এর গুড়ো তুলসী পাতার রস ও মধু মিশিয়ে খেলে ম্যালেরিয়া সেরে যায়।
* গোলমরিচ ও গন্ধক (কবিরাজি দোকানে পাওয়া যায়) মিহি করে পিষে ঘি দিয়ে ভালো করে মেড়ে নিয়ে গায়ে গালে এবং তার পরে রোদে গিয়ে বসলে চুলকানি সেরে যায়।

১টি মন্তব্য

  1. পর্তুগিজ, ফরাসী ও ইংরেজরা যে কয়টি কারণে অবিভক্ত ভারতবর্ষে আগমন করেছিল তাদের জন্য মশলা সংগ্রহ একটি। ওই সময়কালে ভারবর্ষে মশলার উৎপাদন হতো প্রচুর। ইউরোপীয় বণিকরা মশলা সংগ্রহে মূলত ভারতবর্ষে অভিমুখে জাহাজ প্রেরণ করতো। ভারতবর্ষের অন্যান্য এলাকায় প্রচুর মশলার চাষ হলেও বাংলাদেশে সে সময়ে মশলা চাষ হতো না। আদিকালে বাংলাদেশের মশলার যোগান হতো ভারত থেকে। বর্তমানেও বাংলাদেশে যে মশলা উৎপাদন হয় তা খুবই অপ্রতুল। এখনো ভারত ও পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন জাতের মশলা আমদানি করে এ দেশের চাহিদা মেটানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশেও মশলা উৎপাদন করা সম্ভব। সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের মশলা দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও করা সম্ভব এটি প্রমান করেছেন হবিগঞ্জের আলীয়াছড়া পান পুঞ্জির বাসিন্দা আদিবাসী খাসিয়ারা। এ পুঞ্জির প্রায় ২ শত খাসিয়া গোলমরিচ চাষে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন, অর্থনৈতিকভাবে হয়েছেন লাভবান।
    ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের মুছাই পাহাড়ে আদিবাসী খাসিয়া পান পুঞ্জি আলীয়াছড়ার অবস্থান। এ পুঞ্জির বাসিন্দা আদিবাসী খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী খাসিয়া পান, সুপারি, লেবু, আনারস চাষে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু বর্তমানে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। ২০০৫ সাল থেকে এ পুঞ্জির বাসিন্দরা নির্ভর করছেন গোলমরিচ চাষে। পুঞ্জির ৬০ একর এলাকা জুড়ে হাজার হাজার গোলমরিচ গাছ। অধিকাংশ খাসিয়া পান চাষি পানের বদলে গোলমরিচ চাষে অধিক পরিমাণে আগ্রহী হয়ে ওঠার ফলে পাল্টে গেছে আলীয়াছড়া খাসিয়া পান পুঞ্জির অর্থনৈতিক অবস্থা।
    সরজমিন হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার আলীয়াছড়া পান পুঞ্জিতে গিয়ে আদিবাসী গোল মরিচ চাষ খাসিয়াদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, গোল মরিচের গাছ অনেকটা পান গাছের মতো। পান গাছের মতো গোল মরিচ গাছও অন্য বড় ধরনের গাছকে অবলম্বন করে বেড়ে ওঠে। প্রবল বৃষ্টিপাতের সময় অর্থাৎ আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে গোল মরিচ গাছের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা রোপণের ৪ বছরের মধ্যে প্রতিটি গোল মরিচ গাছে ফলন আসে। একটি গাছ থেকে মৌসুমে আনুমানিক ৩ কেজি গোল মরিচ উৎপন্ন হয়। সময়মতো গাছ থেকে গোল মরিচ সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে বাজারজাত করতে হয়। আদিবাসী খাসিয়া পান পুঞ্জি আলীয়াছড়ায় অসংখ্য সুপারি গাছ রয়েছে। এ গাছের অবলম্বন করেই আলীয়াছড়ার আদিবাসী চাষীরা গোল মরিচ চাষ করছেন। এতে খরচ ও পরিশ্রম অনেকটা কমে যায়।
    আলীয়াছড়া খাসিয়া পান পুঞ্জির বাসিন্দা গোল মরিচ চাষি অরুণ খাসিয়া জানান, তিনি তার ৪ একর জমিতে পানের বিকল্প হিসেবে গোল মরিচ চাষ করেছেন। তার গোল মরিচ গাছগুলোতে ফলন হয়েছে ভালো। মান ভালো হাবার কারণে বাজারে মূল্যও পেয়েছের বেশি। তিনি জানান, তার জমিতে যে পরিমাণ গোল মরিচ উৎপাদন হয়েছে তাতে তিনি যে অর্থ উপার্জন করেছেন পান চাষে ওই সময়ে এতো অর্থ উপার্জন সম্ভব নয়। ফলে ওই খাসিয়া পান পুঞ্জির অধিকাংশ বাসিন্দা পানের বদলে গোল মরিচ চাষে অধিক পরিমাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। আলীয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে এখন গোল মরিচ চাষের বিপ্লব শুরু হয়েছে।
    হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল বাতিন জানান, হবিগঞ্জের মাটি, পরিবেশ ও আবহাওয়া গোল মরিচ চাষের সম্পূর্ণ উপযোগী। এ অঞ্চলের চাষীরা গোল মরিচসহ অন্যান্য মশলা জাতীয় ফসল উৎপাদন করতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি জানান, দেশের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার মশলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে ব্যাপক ও বাণিজ্যিকভাবে মশলা উৎপাদন করতে পারলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না।
লিখেছেন:    |   তারিখ: শনিবার, ৩১ মে, ২০১৪ সময়: ১:০৮ অপরাহ্ন 
Shobujbanglablog

No comments:

Post a Comment