Tuesday, February 28, 2017

নখের যত্নে

নখ সুস্থ থাকলে তা যেকোনোভাবেই সাজানো যায়। ছবি: নকশা

নেলপলিশে রাঙানো নখ হোক, মেহেদি রাঙা কিংবা রংবিহীন হোক—নখের সুস্থতা মূল বিষয়। নখ সুন্দর তখনই
দেখাবে, যখন তা সুস্থ থাকবে। কারণ, সুস্থতাই সৌন্দর্যের প্রধান শর্ত। বয়স যা-ই হোক, নখের যত্ন নিতে হবে সব সময়ই। নানা কারণেই আক্রান্ত হতে পারে নখ, তাই প্রয়োজন সচেতনতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হরষিত কুমার পাল জানালেন, নখের যেমন নিজস্ব কিছু রোগ রয়েছে, তেমনি আবার শরীরের অন্যান্য অংশে রোগের কারণেও নখ আক্রান্ত হতে পারে।
নখের সুস্থতায় হরষিত কুমার পালের পরামর্শ
* নখ পরিষ্কার করতে সাবান ব্যবহার করুন। আবহাওয়া একটু ঠান্ডা হলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন সাবানের সঙ্গে। ব্রাশের সাহায্যে নখ পরিষ্কার করা ভালো। কোনোভাবে কাদামাটি লেগে গেলে বা কোনো রাসায়নিক পদার্থ লাগলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব নখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
* নখ ভেজা রাখা ঠিক নয়। এর ফলে বিভিন্ন জীবাণু, বিশেষ করে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। তাই নখ ভেজানোর পর অবশ্যই ভালোমতো মুছে শুকনো রাখতে হবে।
* নখ খুব বেশি লম্বা করা ঠিক নয়, এতে আকস্মিক দুর্ঘটনায় নখ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে নখের আকার যা-ই হোক, পরিষ্কার রাখতে হবে সব সময়।
* নখে যেকোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে (যেমন নখ বসে গেলে বা গর্ত হয়ে গেলে কিংবা হঠাৎ নখ ভঙ্গুর হয়ে গেলে, নখ বা এর চারপাশ ফুলে গেলে, পুঁজ জমলে বা ক্ষত সৃষ্টি হলে) দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নখের পুষ্টি
নখের অধিকাংশ সমস্যাই হয়ে থাকে কোনো না কোনো পুষ্টি উপাদানের অভাবে, জানালেন ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী। নখের সুস্থতায় প্রয়োজন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, বায়োটিন, ভিটামিন বি-১২ সহ অন্যান্য উপাদান। কোনোটির অভাবে নখ বাদামি বা ধূসর হয়ে পড়ে, কোনোটির অভাবে নখে সাদা দাগ পড়তে থাকে, আবার কোনোটির অভাবে নখ ভঙ্গুর হয়ে পড়ে বা নষ্ট হতে থাকে।

নখের পুষ্টির জন্য

* প্রতিদিন দুধ বা দুধের তৈরি খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়। রোজ রাতে দুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
* মাছ, মাংস, ডাল, ডিম ও বাদাম খেতে হবে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এ খাবারগুলো অবশ্যই খেতে হবে।
* শাকসবজি ও ফলমূল বাদ দেওয়া যাবে না। কমলা, আমলকীসহ অন্যান্য টক ফল নখের জন্য উপকারী।
* দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না। গৃহস্থালি কাজে গ্লাভস ব্যবহার করুন। মোজা ব্যবহার করলে তা যেন সুতির হয়। 
সব ধরনের নখেই চাই যত্ন

রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, ‘এক-একজনের নখের ধরন আলাদা হয়ে থাকে। কারও নখ হয়তো খুবই নরম, কোনো কিছু ধরতে গেলে বাঁকিয়ে যায় বা সহজেই কুঁচকে যায়; কারও নখ খুবই ভঙ্গুর প্রকৃতির, আবার কারও নখ স্বাভাবিক। সব ধরনের নখেরই যত্ন প্রয়োজন।’
* যাঁদের নখ একটু ভঙ্গুর, তাঁরা রাতে নখে ভ্যাসলিন লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে নখ সুস্থ থাকবে। দিনে নেলপলিশ লাগালেও তাঁদের রাতে নেলপলিশ তুলে নখে ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখা উচিত। নখের কোনা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে এটি বেশ কার্যকর।
* নখ ভঙ্গুর বা নরম হলে নেলপলিশ কিছুটা সুরক্ষা দেয়। এ ছাড়া নেলপলিশ ব্যবহারের আগে নেইল হার্ডেনার লাগিয়ে নিতে পারেন। কিছু নেইলপলিশে এমনিতেই হার্ডেনার থাকে।
* নখ পাতলা হলে রসুনের একটা কোয়া নিয়ে নখে ঘষতে পারেন। মজবুত হবে।
* স্বাভাবিক নখে নেলপলিশ লাগানো তেমন জরুরি নয়। স্বাভাবিক নখে নেলপলিশ লাগালে এক সপ্তাহ পর পর তুলে নিয়ে এক-দুই রাতের জন্য আবার নেলপলিশ না লাগিয়ে রাখতে পারেন।
* ভালো মানের নেলপলিশ ব্যবহার করুন। 
* কাঁচা মেহেদি দীর্ঘ সময় হাতে লাগিয়ে রাখা ঠিক নয়।
* ১৫ দিন পরপর ম্যানিকিওর ও পেডিকিওর করান।
* নেলপলিশ একটু একটু উঠে গেলে তা রেখে না দিয়ে একেবারে তুলে ফেলাই ভালো। যাঁদের নখ একটু লম্বাটে, তাঁরা চৌকো করে নখ কাটলে সুন্দর দেখাবে। আবার যাঁদের নখ একটু ছোট আকারের, তাঁরা ইউ বা ভি আকৃতি করে নখ কাটলে ভালো দেখাবে।
* কোন রঙের নেলপলিশ কিসের সঙ্গে কখন ব্যবহার করবেন, তা নিজের রুচি ও পছন্দের ভিত্তিতেই ঠিক করুন। পোশাকের ধরনের দিকেও খানিকটা খেয়াল রাখুন। যেমন শাড়ি পরলে নেলপলিশে শাড়ির টোনগুলো আনতে চেষ্টা করতে পারেন, এ কাজে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না।

No comments:

Post a Comment

Pages (20)12345 Next